বর্ধমান জেলার অতি প্রাচীন জনপদ অম্বিকা কালনা। ভারতীয় সংস্কৃতির জীবন্ত সাক্ষী অম্বিকা কালনার গাঙ্গেয় তটভূমিতে স্তরে স্তরে সঞ্চিতহয়ে আছে ইতিহাস। পাল যুগে, সেন যুগে এমনকি গু্প্তযুগেও ‘অম্বুয়া’র সমৃদ্ধ ইতিহাস ছিল। মধ্যযুগে শ্রীচৈতন্যের আবির্ভাবের আগেও কালনার প্রামান্য ইতিহাস রয়েছে। সুলতানী আমেলের পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি কালনার ধর্মীয় সংস্কৃতির সঙ্গে ইসলামী সংস্কৃতির মেল বন্ধনের মুক্ত পরিমণ্ডলকে প্রমান করে। “অম্বিকা কালনা ইতিহাস সমগ্র : ধর্মীয় ও পুরাতাত্ত্বিক ইতিহাস” গ্রন্থটি অম্বিকা কালনার প্রাচীন ধর্মীয় সংস্কৃতির ইতিহাসকে প্রামান্য তথ্য ও ঐতিহাসিক বিচার বিম্লেষণের মধ্য দিয়ে আলোকিত ও জীবন্ত করে তুলেছে। নিরবিচ্ছিন্ন সম্মুখ ধারণার পরিকাঠামো গড়ার উদ্দেশ্যে গ্রন্থটির বিষয় বিন্যাস বিশেষবাবে সাজানো হয়েছে - (১) কালীক্ষেত্র (২) শিবক্ষেত্র (৩) কৃষ্ণক্ষেত্র (৪) দুর্গাক্ষেত্র (৫) বৈষ্ণবক্ষেত্র (৬) জগন্নাথ দেব ও রামসীতাক্ষেত্র (৭) ইসলামিক্ষেত্র (৮) খ্রীষ্টক্ষেত্র (৯) অন্যান্য ধর্মীয়ক্ষেত্র। (১০) কালনার প্রধান মেলা/পার্বণ/পূজা (১১) কালনার আশ্রম ও মঠ। অম্বিকা কালনায় সর্বধর্মের যে সমন্বয় ঘটেছে তা িএই গ্রন্থে সুনিপুনভাবে, উজ্জ্বলরূপে প্রতিভাত হয়েছে।
সুমাল্য দাস
- পেশায় ইংরাজী ভাষার শিক্ষক (এম.এ; বি.এড; ডি.ই.এল.টি) এবং সাংবাদিকতার জন্য জেলায় পরিচিত মুখ। শতাব্দী প্রাচীন ‘পল্লীবাসী’তে সাংবাদিকতায় হাতেঘড়ি। বর্তমানে ‘পল্লীবাসী’, ‘সাম্প্রতিক’, ‘হোত্রী’, ‘শিক্ষা ও সাহিত্য’, ‘সংঘসাথী’ সহ ‘সংবাদ নারদানিক’ এ নিয়মিত লিখে চলেছেন। আঞ্চলিক ইতিহাসের উপর তার একাধিক গ্রন্থ পাঠক মহলে অতি সমাদৃত হয়েছে। ‘অম্বিকা কালনা ইতহাস সমগ্র ধর্মীয় পুরাতাত্ত্বিক ইতহাস’গ্রন্থটির র্ততীয় সংস্কৃরণ বর্তমান গ্রন্থ। বিগত দুটি সংস্কৃরণ শ্রীদাসের সম্পাদিত হলেও বর্তমান গ্রন্থটি লেখকের নিজের লেখা। পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত লেখনীর শ্রমসাধনার মৌলিক নির্যাস বর্তমান গ্রন্থ। সুমাল্য দাসের লেখা 'The History of Ambika Kalna Glimpses of Tourism' গ্রন্থটি আঞ্চলিক সীমা পেরিয়ে আজ বহুমাত্রিক গৌরব অর্জন করেছে। সুমাল্য দাস সম্পাদিত ভবানীপ্রসাদ মজুমাদরের লেখা ‘শ্রেষ্ঠ ছড়া সমগ্র’ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক উপেন্দ্রকিশোর পুরস্কার ২০১২ লাভ করেছে। সুমাল্য দাসের সম্পাদনায় অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নির্বাচিত গল্প সংগ্রহ’ আজও পাঠক মহলে সমাদৃত। লেখকের ‘বরণীয় মনীষীদের সম্রণীয় রঙ্গরসিকতা’ খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বর্তমানে লেখক তটভূমি প্রকাশনীর সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে নিরলস ও নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে চলেছেন।
মূল্য : ৪০০ টাকা মাত্র (চারশত টাকা মাত্র)
**************
ভূমিকা
ইতিহাসের বৃহত্তর পরিসরে আঞ্চলিক ইতিহাসের ভূমিকা অপরিসীম। সুমাল্য দাসের শ্রমসাধ্য, মননশীল ও সাবলীল লেখা ‘অম্বিকা কালনা ইতিহাস সমগ্র: ধর্মীয় ও পুরাতাত্ত্বিক ইতহাস’ এক অথের্ই প্রামাণ্য ইতিহাস। গাঙ্গেয় তীর্থভূমি কালনার ইতহাস সুপ্রাচীন। ওই অঞ্চলের জনজাতির ধর্মীয় বিশ্বাস, আর্থ-সামাজিক জীবন, তাদের পুরাকীতির সুনিপুন গবেষণায় বাগ্ময়ী হয়ে উঠেছে বইটিতে। বইটিতে কালনায় জৈনযুগ ও তার প্রভাব, মুসলমানি আমল, শ্রীচৈতন্যের যুগ এবং বর্ধমান রাজাদের আমলের ‘কালনা’কে চিত্রসহ সুনিপুন ভাবে অঙ্কিত করা সম্ভব হয়েছে। কালনার মত প্রাচীন তীর্থভূমির ধর্মীয় ও পুরাতাত্ত্বিক উপাদানগুলির আরো বেশী করে প্রচারের আলোকে আশা প্রয়োরজন এবং জাতীয় স্তরে গবেষণার আয়োজনও দরকার। এই গ্রন্থটি কালনার প্রাচীন ইতিহাসকে প্রচারের পাদপ্রদীপে আনতে সক্ষম হবে বলে আমি মনে করি। শাক্ত-নগরী কালনায় রয়েছেন দেবী অম্বিকা দিদ্ধেশ্বরী, সাধন কালী, বড়কালীমাতা, মেজকালীমাতা, সেজকালীমাতা, ভবা পাগলা প্রতিষ্ঠিত মা ভবানী : অন্যদিকে শিবক্ষেত্র কালনায় রয়েছে ১০৮ শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, রামেশ্বর শিব মন্দির, বাঘনাপাড়ার গোপেশ্বর মন্দির, বর্ধমান রাজাদের আমলে পুরাকীতির কালনা তথা বাঙ্গালীর জাতীয় সম্পদ - লালজী মন্দির, গোপাল মন্দির, কৃষ্ণচন্দ্রের মন্দির তাদের অন্যতম। শ্রীচৈতন্যের জীবিতকালে একমাত্র নির্মিত ‘মহাপ্রভূ বাড়ি’ বৈষ্ণব সাধকদের তীর্থভূমি। এমন বহু বিরল ইতহাস নিয়ে কালনা আজও প্রাচীন ইতিহাসের নীরব সাক্ষী। ইসলামী ও খ্রীষ্টক্ষেত্রের প্রাচীনত্ত্বও আমাকে অবাক করে। কালনায় এক কথায় সর্বধর্মের সমম্বয় ঘটেছে।
গ্রন্থটির সাবিক সাফল্য কামনা করি।
অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়
১৫/০৬/২০১৭
এ.সি.-১৮৫, প্রফুল্লকানন
কলকাতা-৭০০১০১
**************
শুভেচ্ছাপত্র
সুমাল্য দাসের লেখা ‘অম্বিকা কালনা ইতিহাস সমগ্র: ধর্মীয় ও পুরাতাত্ত্বিক ইতিহাস’ নবকলবরে প্রকাশিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত হলাম।
ঐতিহ্যশালী টেরাকোটা শিল্পসমৃদ্ধ গঙ্গাপাড়ের প্রাচীন শহর অম্বিকা কালনা। ২০০৫ সালের ১৪ই আগস্ট 'The Telegraph' পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ আমায় কালনা সম্পর্কে বিশেষ আগ্রহী করে তুলেছিল। সেখানে ছিল - "Every edifice in Ambika Kalna or Kalna as it is popularly known, oozes history. The peerless architecture of the temples of this town and their history leave few untouched." মন্দিরময় এই শহরের সর্বত্র ইতিহাসের ছোঁয়া এবং মূর্ততা রয়েছে। The Times of India, Dec.31, 2011 লিখেছেন "Kalna will sweep you off your feet when you look at the temples that have been taken up by the ASI for preservation and restoration. What is the magic of this town ? You won't know until you step in "-
বর্ধমান জেলার অতি প্রাচীন জনপদ অম্বিকা কালনা। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সময়ের সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলনের বহু নিদর্শন এখানে রয়েছে। সর্বধর্মসমন্বয় এবং মানবতাবোধে আপ্লুত এই মঞরে অনেককিছু রয়েছে যা গবেষণার দাবী রাখে। স্নেহভাজন সুমাল্য দসের এই গ্রন্থ নির্মাণে যে কঠোর শ্রমসাধনা রয়েছে তা এক কথায় অনন্য। তার এই সৃষ্টি অনন্যকীর্তি। আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায় এই গ্রন্থ ধ্রুপদী দৃষ্টান্ত। বিষয় বিন্যাস, চিত্র ব্যবহার ও বিন্যাস; বাহুল্যবর্জিত বর্ণনা এবং তথ্যনির্ভরতা এই গ্রন্থকে রিজুতা প্রদান করেছে। তবে ইসলামিক ক্ষেত্রটি আরো গবেষণার দাবী রাখে।
গ্রন্থটির সার্বিক সাফল্য কামনা করি।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
১৬/১১/২০১৩
৬৩/২ বি.কে.মৈত্র রোড
কলকাতা-৭০০০৩৬
শুভেচ্ছাপত্র
অম্বিকা কালনার সুপ্রাচীন ইতিহাসের মূল বৈশিষ্ট্য আধ্যাত্মিক মনন পরিচর্যার সংস্কৃতি এবং লোক সংস্কৃতির সঙ্গে তার মেলবন্ধন। সূমাল্য দাসের প্রগাঢ় মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রমের সার্থক ফসল “অম্বিকা কালনা ইতিহাস সমগ্র: ধর্মীয় ও পুরাতাত্ত্বিক ইতিহাস” নবকলেবরে প্রকাশিত হচ্ছে। বইটির বিষয় শ্রেণি বিন্যাসকরণ প্রশংসনীয়। অতি সুনিপুনভাবে কালীক্ষেত্র - শিবক্ষেত্র-কৃষ্ণক্ষেত্র-দূর্গাক্ষেত্র-বৈষ্ণবক্ষেত্র ইত্যাদির বিষয় বিন্যাস করা হয়েছে। বইটির Manuscript গুলি পড়ে আমার মনে হয়েছে কালনার উপর এত বিস্ত্বর্ণ ও বর্ধিত গবেষণা এখানে সন্নিবেশিত হয়েছে যা আঞ্চলিক ইতিহাসের প্রামাণ্য গ্রন্থ বললে অত্যুক্তি হবে না।
সুমাল্য দাসের এই গ্রন্থ সার্থক ও সাফল্য মন্ডিত হোক এবং পাঠকমহলে সুপরিচিত হোক ঈশ্বরের কাছে সেই প্রার্থনাই করি।
ভবানীপ্রসাদ মজুমদার
২৬/১২/২০১১
১০১/২, মাকড়দহ রোড
কলকাতা-৭১১১০১
শুভেচ্ছাপত্র
শ্রী সুমাল্য দাসের লেখা :‘অম্বিকা কালনা ইতিহাস সমগ্র: ধর্মীয় ও পুরতাত্ত্বিক ইতিহাস’ একটি ধ্রুপদী আঞ্চলিক ইতিহসা। গবেষণার পূর্ণ আকর এই গ্রন্থে কালনার আত্মবিস্মৃত ইতিহাস তথ্যসমৃদ্ধ আলোকে তুলে ধরা হয়েছে। এই গ্রন্থ অদূর ভবিষ্যতে আরও গবেষণার পথ প্রশস্ত করবে। এমন গ্রন্থ লেখার জন্য শ্রী সুমাল্য দাসকে সাধুবাদ জানাই। ঈশ্বরের কাছে গ্রন্থটির সাফল্য কামনা করি।
শ্রী যজ্ঞেশ্বর চৌধুরী
২৮/১০/২০২১
ভদ্রকালী, উত্তরপাড়া
হুগলী-৭১২২৩২