সমকালের আধুনিক কবিতার দুর্বোধ্যতার দায়ে দুষ্ট নয় কবি শুভাশিস চক্রবর্তীর কবিতা। বরং কবিতাগুলির বিশেষ কথন মনে চেতনায় এবং বৌদ্ধিক সত্ত্বায় নাড়া দেয়। জানায় কবিতা আটপৌরে গৃহস্থালীর মতো, আবার মননে আধুনিকতার সঙ্গে প্রগতিশীলতাও বাস করে। শুভাশিস চক্রবর্তীর কবিতা ব্যক্তিক থেকে নৈর্বক্তিকতা এবং সর্বোপরি হয়ে যায় সর্বজনীন। একনিষ্ঠ পাঠক এখানেই খুঁজে পান নিজেকে। এখানেই সাহিত্য হয়ে ওঠে কালজয়ী। সর্বজনবিদিত। একান্ত আপনার। শুভাশিস চক্রবর্তীর কবিতাগুলি তেমনই – কোথায় যেন নিজের সঙ্গে নিজের দেখা হয়ে যায়; আলাপচারিতায় মৌনমুখরতা ভেঙে জন্ম নেয় স্বকথন।
শুভাশিস চক্রবর্তী
- কবি শুভাশিস চক্রবর্তীর জন্ম কালনা মহকুমার অন্তর্গত রামেশ্বরপুর গ্রামে। ১৯৫৬ সালের ৫ই জানুয়ারী। গ্রামীণ আবহাওয়ায়, সারল্যময় শ্যামলিমায় কবিসত্ত্বার সজীব চারা এখন স্বাভাবিক উদ্ভিদের ন্যায় – ‘এক পায়ে দাঁড়িয়ে সব গাছ ছাড়িয়ে, উঁকি মারে আকাশে।’ বেহুলা নদী, বাঁশ বন, দিগন্ত বিস্তত ধানখেত, পুকুর পাড়, এঁদো ডোবা, পাখপাখালি, গাছগাছালি সহ এক প্রকাণ্ড গ্রামীণ জীবন ও মানবতা তাঁর কবিত্বের আবাহনী শক্তি।
শুভাশিস চক্রবর্তী সঙ্গীত জগতের এক উল্লেখযোগ্য নাম। সঙ্গীত সাধনায় নিজের প্রতি সুবিচার করলেও লেখনি প্রতিভার প্রতি দীর্ঘ অবিচারের ইতি ঘটল এই গ্রন্থ প্রকাশের মধ্য দিয়ে।
আধুনিক কবিতা লেখায় প্রেরণা সহোদর দেবাশিস চক্রবর্তীর কাছে। শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক শ্রীযুক্ত কল্যাণ ভট্টাচার্যর ঐকান্তিক অনুপ্রেরণায় এই গ্রন্থ প্রকাশ সম্ভব হয়েছে। বন্ধুবর শ্রী সমীর ঘোষ কবির অন্যতম সহযোগী। ঐকান্তিকতা ও অনুপ্রেরণায় এই কাজে কবিকে যাঁরা উদ্বুদ্ধ করেছেন তাঁদের কথা না বললে সত্যের অপলাপ ঘটবে – তাঁরা হলেন সুমনা ভট্টাচার্য, নীতিশা অধিকারী, প্রিয়াঙ্কা দাস, দেবায়ন চক্রবর্তী, পম্পা চক্রবর্তী ও অপরাজিতা চক্রবর্তী।