কবি উদয় কুমার সাহা, তাঁর বর্তমান কাব্যগ্রন্থ ‘বালুকা বেলায়’ তাঁর দীর্ঘ জীবনের নানাবিধ অভিজ্ঞতার নির্যাস নান্দনিকতার আবর্তে প্রতিচ্ছবির মত তুলে ধরেছেন কবিতার মোড়কে। কবিতা নির্মাণ ও সৃষ্টির নানাবিধ পরীক্ষণ ও নিরীক্ষণ েএই কাব্যগ্রন্ধে বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। কবি তাঁর বলিষ্ঠ লিখণিগুনে বারেবারে প্রতিভাত করেছেন তার কাব্যের প্রতি, জীবনের প্রতি, সৃষ্টি সুখের প্রতি বিশেষ অনুরাগ। কবিতা কোথাও সরল জীবনের মতো সরল, আবার কোথাও অভিজ্ঞতার নির্যাসে সম্পৃক্ত, অসরলরৈখিক। জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, ঘাত প্রতিঘাত মনকে যেভাবে আন্দেলিত করে তারই প্রতীকী প্রকাশ কবিতার মোড়কে সঞ্চারিত হয়েছে এই কাব্যগ্রন্থে। কবিতাগুলির শব্দ চয়নে ও নামকরণে রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। কোথাও কোথাও দার্শনিকতার আভাস ঝংকৃত হয়েছে কবিতার বিভিন্ন অঙ্গে। গ্রন্থটি এককথায় সুখপাঠ্য। কবি বারবার কবিতার আঙ্গিকে ধরতে চেয়েছেন সীমার মাঝে অসীম, বিন্দুর মধ্যে সিন্দু, জীবনের মধ্যে মহাজীবনকে। ‘বালুকা বেলায়’ কাব্যগ্রন্থ সেই প্রচেষ্টার নীরব সাক্ষী।
কবি উদয় কুমার সাহা (দেব কুমার) ভারতের বর্ধমান জেলার ভাতাড় থানার মাধবপুর গ্রামে ১৯৪৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শম্ভুনাথ সাহা, মাতা সরস্বতী সাহা। মা বাবার প্রথম সন্তান। পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। পেশাগত জীবন কাটিয়েছেন ঝাড়খন্ড, বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত। লোহা লক্কর, ইঞ্জিন এরূপ যন্ত্রদানবদের নিয়ে কর্মজীবন অতিবাহিত করে অবসর জীবনে সাহিত্য সভায় রুচিশীল গুণীদের সান্নিধ্য লাভ এবং তাঁদের সাথে পরিচিত হয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন। ভালোবাসেন পরিবার ও প্রাণখোলা হৃদয়বান মানুষদের। স্ত্রী কবি সন্ধ্যা সাহার সাথে বাংলাদেশ ভ্রমণ করে কবি সাহিত্যিকদের উৎসাহ আর অনুপ্রেরণায় লিখছেন। সাহিত্যের টানে বাংলাদেশে বিভিন্ন জেলায় কবি সাহিত্যিকদের সাথে মিশেছেন, দেখেছেন অনেক দর্শনয়ি স্থান। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কবি সমাবেশে অংশগ্রহণ করছেন। তার রচিত কবিতা ও প্রবন্ধগুলি মা মাটি ও মানুষদের নিয়ে সহজ সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় লেখা। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন পত্রিকায় তার রচিত কবিতা, প্রবন্ধ প্রকাশ হচ্ছে। মানিক মজুমদার জীবনী সংকলন ‘প্রীতিডোরে বাঁধা’ গ্রন্থের সম্পদক মণ্ডলীর সদস্য। তিন কন্যা সন্তানের জনক। অবসরে এখন নিরলস সাহিত্য চর্চায় ব্রত করেছেন।
বর্তমান কাব্যগ্রন্থ ‘বালুকা বেলায়’ কবি উদয় কুমার সাহা তার জীবনের নানাবিধ অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, অনুরণন ছবির মত তুলে ধরেছেন লেখনীর টানে টানে। কবিতাগুলি হয়ে উঠেছে অভিজ্ঞাতর নির্যাসে সম্পৃক্ত, সমৃদ্ধ। জীবন সায়াহ্নে কবির কলমে ফুটে উঠেছে জীবনের নানাবিধ চলচ্ছবি - তােই গ্রন্থটি পাঠকদের কাছে হয়ে উঠবে - এক অনুপ্রাণিত ফসল, জীবনের নির্যাস, বেঁচে থাকার আনন্দ ।